এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা ফল বাতিল করে পুনরায় ফল তৈরি ও প্রকাশের দাবি জানিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। বেলা ১টার দিকে বিক্ষোভ করার পর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষে গিয়ে ভাঙচুর চালান শিক্ষার্থীরা।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিকাল সাড়ে ৫টার দিকেও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন অটো পাসের দাবিকারী শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার অবরুদ্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আমার রুম ভঙ্চুর করা হয়েছে।’
কেন ভাঙচুর ও অবরুদ্ধ করা হলো, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের অটো পাস দিতে হবে, সেই দাবি নিয়ে এসে ভাঙচুর করে।’ তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যান। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করছেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
জানা গেছে, রবিবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের পক্ষে-বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। তাদের সঙ্গে অনেক নারী অভিভাবককেও দেখা গেছে। বেলা পৌনে ২টার দিকে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এদিকে দুপুরে শিক্ষা বোর্ডের প্রবেশের সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে তিন ছাত্রীসহ ছয়জন আহত হন। তাদের মধ্যে দুজন ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের নাম প্রিয়াঙ্কা (১৮) ও জান্নাতুল (১৮)।
গত ১৫ অক্টোবর এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইতিমধ্যে যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। এ জন্য তারা সবগুলো বিষয়ের ওপর ‘ম্যাপিং’ করে ফলাফল নতুন করে প্রকাশের দাবি জানাচ্ছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রকাশিত ফলাফল বৈষম্যমূলক। সব কটি বিষয়ের ওপর সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল প্রকাশ করতে শিক্ষা বোর্ডকে বলেছি। আমরা এসএসসি পরীক্ষায় পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতেই সব বিষয়ের ওপর সাবজেক্ট ম্যাপিং করার দাবি জানাই।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫, ২৮ জুলাই এবং ১ ও ৪ আগস্টের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। এরপর অবশিষ্ট পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি করেন পরীক্ষার্থীরা। আর অটো পাস ঘোষণা না দিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান পরীক্ষার্থীরা। পরে অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো আর না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রে সাবজেক্ট ম্যাপিং হবে।
গত ১৫ অক্টোবর ফল প্রকাশিত হয়। এবার পরীক্ষায় মোট অংশ নেন ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। আর ফেল করেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৭৪৯ জন। সাবজেক্ট ম্যাপিয়ে সব বিষয় পাস করলেও অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হন এসব পরীক্ষার্থী।